
টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলায় সাবেক সেনা সদস্যকে গ্রেপ্তারের পর থানা হেফাজতে রেখে শারীরিক নির্যাতন করার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে।
পুলিশ কর্তৃক শারীরিক নির্যাতনের শিকার অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য আসিফুর রহমান কালিহাতী উপজেলার হায়াতপুর এলাকার খলিলুর রহমান খান।
স্বজনদের অভিযোগ, বুধবার রাতে কালিহাতী থানা হাজতে রেখে আসিফুর রহমানকে শারীরিক নির্যাতন করে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আবুল কালাম ভূঞা, কনস্টেবল হারুর অর রশিদ ও আব্দুর রউফ।
এর আগে বুধবার ওই সেনা সদস্যকে ঢাকার সাভার এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে ওই রাতে তাকে কালিহাতী থানায় নিয়ে আসা হয়।
জানা গেছে, সাবেক সেনা সদস্য আসিফুর রহমানের স্ত্রী লাবনী আক্তার বাদী হয়ে গত বছর মে মাসে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (ক্যান্টনমেন্ট) আদালতে যৌতুক আইনে মামলা দায়ের করেন।
ওই মামলায় তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। পরে পুলিশ তাকে সাভারের ভাড়া বাসা থেকে গ্রেপ্তার করে রাতেই থানার হেফাজতে রাখা হয়।
ওই সেনা সদস্যের ভাই ওয়াসিম বলেন, থানা হেফাজতে রাখার পর রাতে লাইট বন্ধ রেখেছিল পুলিশ। পরে ভোর রাতের দিকে পুলিশের কাছে পানি চাইলে তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজসহ মারধর করা হয়।
এরপর রক্তাক্ত অবস্থায় পরে তাকে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা দিয়ে টাঙ্গাইল কোর্ট হাজতে প্রেরণ করা হয়। থানার ওসিসহ দুই পুলিশ সদস্য তাকে মারধর করে।
পরে ভাই আদালতে আসার পর কান্নায় ভেঙে পড়েন। এসময় তিনি জানায়, থানা হেফাজতে ওসিসহ দুই কনস্টেবল বেদম প্রহার করে রক্তাক্ত করেছে তাকে।
টাঙ্গাইলের কোর্ট ইন্সপেক্টর লুৎফর রহমান বলেন, থানা পুলিশের সদস্যরা ওই আসামিকে আদালতে আনার আগেই টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা দিয়ে কোর্টে নিয়ে এসেছিল।
অভিযোগ অস্বীকার করে কালিহাতী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবুল কালাম ভূঞা বলেন, হেফাজতে নেওয়ার আগে ও পরে ওই সেনা সদস্য পুলিশের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেছে।
পরে সকালে তাকে সিএনজিচালিত অটোরিকশাযোগে টাঙ্গাইল আদালতে পাঠানোর সময় বাগুটিয়া এলাকায় প্রস্রাবের কথা বলে পালানোর চেষ্টা করে। এসময় পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি হয়।
পরে থানা থেকে আরেকটি টিম পাঠানো হয় ঘটনাস্থলে। এতে শরীরের চামড়া হয়ত ছিলে গেছে। পরে তাকে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
কালিহাতীর (সার্কেলের অতিরিক্ত) পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল ইমরান জানান, থানায় যেহেতু সিসি ক্যামেরা রয়েছে সুতরাং এই ধরনের ঘটনা সত্য নয়।
তবে ওই সেনা সদস্য পালানোর চেষ্টা করলে ঘটনাস্থলে বাড়তি পুলিশ সদস্য পাঠিয়ে তাকে টাঙ্গাইল আদালতে পাঠানো হয়।