ঢাকা , রবিবার, ২৫ মে ২০২৫, ১০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

টাঙ্গাইলে এলজিইডির ৪ প্রকৌশলী ও ২ ঠিকাদারের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

  • ডেস্ক প্রবাহ
  • আপলোডের সময় : ০৯:২৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৫
  • ৫০৩৪ Time View

টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলায় দুটি রাস্তার উন্নয়ন প্রকল্পে দুর্নীতি ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) চার প্রকৌশলী এবং দুই ঠিকাদারের বিরুদ্ধে দুটি পৃথক মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

রবিবার (২৭ এপ্রিল) টাঙ্গাইল জেলা দুর্নীতি দমন কমিশন কার্যালয়ের উপসহকারী পরিচালক মো. বাসেদ আলী টাঙ্গাইলের সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে মামলা দুটি দায়ের করেন।

দণ্ডবিধির ৪০৯, ৪২০, ১০৯ ধারাসহ ১৯৪৭ সনের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় মামলাগুলো দায়ের করা হয়েছে।

একটি মামলার আসামিরা হলেন, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স ফ্রেন্ডস কনস্ট্রাকশনের স্বত্বাধিকারী শহীদুর রহমান খান, এলজিইডির টাঙ্গাইলের সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী (বর্তমানে এলজিইডি প্রধান কার্যালয়ের মনিটরিং ও মূল্যায়ন শাখায় কর্মরত) রফিকুল ইসলাম, নাগরপুরের সাবেক উপজেলা প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান (বর্তমানে বিদেশে শিক্ষা ছুটিতে), একই উপজেলার উপ-সহকারী প্রকৌশলী শহিদুল ইসলাম খান এবং মাইনুল হক (বর্তমানে ঘাটাইলে কর্মরত)।

অপর মামলায় আসামি করা হয়েছে, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স সৈয়দ মজিবর রহমানের স্বত্বাধিকারী সৈয়দ মজিবর রহমান এবং এলজিইডির টাঙ্গাইলের সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম, নাগরপুরের সাবেক উপজেলা প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান ও উপ-সহকারী প্রকৌশলী শহিদুল ইসলাম খানকে।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ময়মনসিংহ রিজিওনাল রুরাল ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট (এমআরআরআইডিপি) প্রকল্পের আওতায় নাগরপুরের তেবাড়িয়া জিসি-দপ্তিয়র ইউপিসি অফিস সড়কে বিসি দ্বারা উন্নয়ন কাজে ডাব্লিউবিএম ও সাববেইজের ৬ লাখ ৫১ হাজার ৫০৯ টাকার কাজ কম করা হয়।

এ ছাড়া, ৭৫ মিটার সড়কের কোনো কাজ না করেই ৩ লাখ ৫৮ হাজার ৩৬ টাকা অর্থাৎ মোট ১০ লাখ ৯ হাজার ৫৪৫ টাকা আত্মসাৎ করা হয়।

একই রাস্তায় প্রাইম কোট এবং ২৫ এমএম থিক কমপ্যাকটেড ডেন্স কার্পেটিংয়ের কোনো কাজ না করেই পরস্পর যোগসাজশে ৩১ লাখ ১ হাজার ৫৯১ টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করা হয়েছে।

অপরদিকে, এমআরআরআইডিপি প্রকল্পের আওতায় নাগরপুরের সিংজোড়া-গয়হাটা (ভাররা জিসি-সলিমাবাদ আরডিএস ভায়া গয়হাটা ইউপি) ১১০০ মিটার দৈর্ঘ্যের সড়কে বিসি সার্ফেস উন্নয়ন কাজে প্রাইম কোট এবং ২৫ এমএম থিক কমপ্যাকটেড ডেন্স কার্পেটিংয়ের কোনো কাজ না করেই ২১ লাখ ৫৭ হাজার ৫১০ টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করা হয়েছে।

টাঙ্গাইল জেলা দুর্নীতি দমন কমিশন কার্যালয়ের উপ-পরিচালক ফখরুল ইসলাম জানান, রাস্তা নির্মাণে দুর্নীতি ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগের ভিত্তিতে দুদক প্রধান কার্যালয়ের নির্দেশে গত ২০ এপ্রিল একটি এনফোর্সমেন্ট অভিযান চালানো হয়।

এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী, নাগরপুরের উপজেলা প্রকৌশলী কার্যালয়ে নিরপেক্ষ প্রকৌশলী, প্রকল্প সংশ্লিষ্ট উপ-সহকারী প্রকৌশলী, বর্তমানে কর্মরত উপজেলা প্রকৌশলীসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে এই অভিযান পরিচালিত হয়।

প্রকল্পের বাস্তবায়ন দেখানো রাস্তাটি সরেজমিনে পরিদর্শন করে নিরপেক্ষ প্রকৌশলী দ্বারা পরিমাপ গ্রহণ করা হয়।

তিনি আরও জানান, তদন্তে কাজ না করেই পরস্পর যোগসাজশে বিল উত্তোলন করে আত্মসাৎ করার অভিযোগ প্রাথমিকভাবে আসামিদের বিরুদ্ধে প্রমাণিত হয়েছে।

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

টাঙ্গাইলে এলজিইডির ৪ প্রকৌশলী ও ২ ঠিকাদারের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

আপলোডের সময় : ০৯:২৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৫

টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলায় দুটি রাস্তার উন্নয়ন প্রকল্পে দুর্নীতি ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) চার প্রকৌশলী এবং দুই ঠিকাদারের বিরুদ্ধে দুটি পৃথক মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

রবিবার (২৭ এপ্রিল) টাঙ্গাইল জেলা দুর্নীতি দমন কমিশন কার্যালয়ের উপসহকারী পরিচালক মো. বাসেদ আলী টাঙ্গাইলের সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে মামলা দুটি দায়ের করেন।

দণ্ডবিধির ৪০৯, ৪২০, ১০৯ ধারাসহ ১৯৪৭ সনের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় মামলাগুলো দায়ের করা হয়েছে।

একটি মামলার আসামিরা হলেন, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স ফ্রেন্ডস কনস্ট্রাকশনের স্বত্বাধিকারী শহীদুর রহমান খান, এলজিইডির টাঙ্গাইলের সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী (বর্তমানে এলজিইডি প্রধান কার্যালয়ের মনিটরিং ও মূল্যায়ন শাখায় কর্মরত) রফিকুল ইসলাম, নাগরপুরের সাবেক উপজেলা প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান (বর্তমানে বিদেশে শিক্ষা ছুটিতে), একই উপজেলার উপ-সহকারী প্রকৌশলী শহিদুল ইসলাম খান এবং মাইনুল হক (বর্তমানে ঘাটাইলে কর্মরত)।

অপর মামলায় আসামি করা হয়েছে, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স সৈয়দ মজিবর রহমানের স্বত্বাধিকারী সৈয়দ মজিবর রহমান এবং এলজিইডির টাঙ্গাইলের সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম, নাগরপুরের সাবেক উপজেলা প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান ও উপ-সহকারী প্রকৌশলী শহিদুল ইসলাম খানকে।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ময়মনসিংহ রিজিওনাল রুরাল ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট (এমআরআরআইডিপি) প্রকল্পের আওতায় নাগরপুরের তেবাড়িয়া জিসি-দপ্তিয়র ইউপিসি অফিস সড়কে বিসি দ্বারা উন্নয়ন কাজে ডাব্লিউবিএম ও সাববেইজের ৬ লাখ ৫১ হাজার ৫০৯ টাকার কাজ কম করা হয়।

এ ছাড়া, ৭৫ মিটার সড়কের কোনো কাজ না করেই ৩ লাখ ৫৮ হাজার ৩৬ টাকা অর্থাৎ মোট ১০ লাখ ৯ হাজার ৫৪৫ টাকা আত্মসাৎ করা হয়।

একই রাস্তায় প্রাইম কোট এবং ২৫ এমএম থিক কমপ্যাকটেড ডেন্স কার্পেটিংয়ের কোনো কাজ না করেই পরস্পর যোগসাজশে ৩১ লাখ ১ হাজার ৫৯১ টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করা হয়েছে।

অপরদিকে, এমআরআরআইডিপি প্রকল্পের আওতায় নাগরপুরের সিংজোড়া-গয়হাটা (ভাররা জিসি-সলিমাবাদ আরডিএস ভায়া গয়হাটা ইউপি) ১১০০ মিটার দৈর্ঘ্যের সড়কে বিসি সার্ফেস উন্নয়ন কাজে প্রাইম কোট এবং ২৫ এমএম থিক কমপ্যাকটেড ডেন্স কার্পেটিংয়ের কোনো কাজ না করেই ২১ লাখ ৫৭ হাজার ৫১০ টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করা হয়েছে।

টাঙ্গাইল জেলা দুর্নীতি দমন কমিশন কার্যালয়ের উপ-পরিচালক ফখরুল ইসলাম জানান, রাস্তা নির্মাণে দুর্নীতি ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগের ভিত্তিতে দুদক প্রধান কার্যালয়ের নির্দেশে গত ২০ এপ্রিল একটি এনফোর্সমেন্ট অভিযান চালানো হয়।

এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী, নাগরপুরের উপজেলা প্রকৌশলী কার্যালয়ে নিরপেক্ষ প্রকৌশলী, প্রকল্প সংশ্লিষ্ট উপ-সহকারী প্রকৌশলী, বর্তমানে কর্মরত উপজেলা প্রকৌশলীসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে এই অভিযান পরিচালিত হয়।

প্রকল্পের বাস্তবায়ন দেখানো রাস্তাটি সরেজমিনে পরিদর্শন করে নিরপেক্ষ প্রকৌশলী দ্বারা পরিমাপ গ্রহণ করা হয়।

তিনি আরও জানান, তদন্তে কাজ না করেই পরস্পর যোগসাজশে বিল উত্তোলন করে আত্মসাৎ করার অভিযোগ প্রাথমিকভাবে আসামিদের বিরুদ্ধে প্রমাণিত হয়েছে।