ঢাকা , শনিবার, ২৪ মে ২০২৫, ৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ভূঞাপুরে অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে সেবা নিতে রোগীদের দুর্ভোগ: নিজেই এখন রোগী

টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সেবার মান ও পরিবেশ নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন রোগী ও স্বজনরা। বিশেষ করে হাসপাতালের অপরিচ্ছন্ন পরিবেশ নিয়ে ক্ষুব্ধ তারা।

এ ছাড়াও মানহীন খাবার, দুর্গন্ধময় শৌচাগার ও প্রয়োজনীয় ওষুধের অপ্রাপ্তির কথা তুলে ধরে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান।

হাসপাতাল ও রোগীদের সূত্রে জানা যায়, হাসপাতালে প্রায় এক বছর ধরে সিজার অপারেশন বন্ধ রয়েছে। সামান্য কাটাছেঁড়ার জন্য রোগীকে টাঙ্গাইল শহরে পাঠানো হয়। নানা অব্যবস্থাপনা, জনবল ও যন্ত্রপাতির সংকটে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে রোগীদের।

এ ছাড়াও ৫০ শয্যাবিশিষ্ট এ হাসপাতালে একটি জেনারেটর থাকলেও তা ঠিক মতো চালু করা হয় না। বিদ্যুৎ চলে গেলে পুরো হাসপাতাল অন্ধকারে ডুবে যায়। চার্জিং বাল্বের ব্যবস্থা থাকলেও তা কয়েকটি বাতিতে সীমাবদ্ধ। বাকি অংশ অন্ধকারে থাকে, যা রাতে রোগী ও স্বজনদের জন্য ভয়ের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

সরেজমিনে, দোতলায় উঠার সিঁড়িতে বেশ ময়লা। মেঝেতেও ময়লার দাগ। দেয়ালের কোথাও কোথাও কফ, থুতু ও পানের পিকের দাগ লেগে আছে। রোগীদের শৌচাগার দীর্ঘদিন পরিষ্কার না নোংরা হয়ে আছে।

এ ছাড়া বেসিনের অবস্থাও নাজুক। এসব নিয়ে রোগী ও স্বজনরা নিয়মিত অভিযোগ করলেও অবস্থার উন্নতি হচ্ছে না।

গোপালপুর থেকে আসা রোগী মৌসুমি আক্তার বলেন, হাসপাতালের খাবারের মান ভালো না। আমরা সব সময় বাইরে থেকে কিংবা বাসা থেকে খাবার নিয়ে আসি। পেটে ব্যথা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি। স্যালাইন ছাড়া আর কোনো ওষুধ দেয়নি কর্তৃপক্ষ।

মৌসুমি আক্তারের ১০ বছর বয়সী মেয়ে সুমাইয়ার ভাষ্য, হাসপাতালের টয়লেটে গিয়ে বমি বমি ভাব হয়েছিল। পরে টয়লেট না করেই চলে এসেছি।

রহিমা নামের এক রোগীর আত্মীয় বলেন, হাসপাতালের টয়লেটের অবস্থা খুবই বাজে। কোনো সময়ই পরিষ্কার করা হয় না। কোনো মানুষ এখানে টয়লেট করতে পারেন না। হাসপাতালের লোকজন কোনো কাজ করে না। আমরা খুব কষ্টে হাসপাতালে অবস্থান করি, দেখার কেউ নেই।

এ বিষয়ে ভূঞাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ আব্দুস সোবাহান বলেন, হাসপাতালে পর্যাপ্ত পরিমাণে ওষুধের সরবরাহ নেই। টয়লেট পরিষ্কার করার মতো লোক নেই। বাইরে থেকে লোক ডেকে এনে কাজ করাতে করতে হয়।

এ ছাড়া এক বছর ধরে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক না থাকায় সিজার হচ্ছে না। এসব বিষয় সমাধানের জন্য মন্ত্রণালয়ে জানানো হয়েছে। তবুও আমরা যথাযথ সেবা দিয়ে যাচ্ছি।

 

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় খবর

ভূঞাপুরে অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে সেবা নিতে রোগীদের দুর্ভোগ: নিজেই এখন রোগী

আপলোডের সময় : ০৫:২৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫

টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সেবার মান ও পরিবেশ নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন রোগী ও স্বজনরা। বিশেষ করে হাসপাতালের অপরিচ্ছন্ন পরিবেশ নিয়ে ক্ষুব্ধ তারা।

এ ছাড়াও মানহীন খাবার, দুর্গন্ধময় শৌচাগার ও প্রয়োজনীয় ওষুধের অপ্রাপ্তির কথা তুলে ধরে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান।

হাসপাতাল ও রোগীদের সূত্রে জানা যায়, হাসপাতালে প্রায় এক বছর ধরে সিজার অপারেশন বন্ধ রয়েছে। সামান্য কাটাছেঁড়ার জন্য রোগীকে টাঙ্গাইল শহরে পাঠানো হয়। নানা অব্যবস্থাপনা, জনবল ও যন্ত্রপাতির সংকটে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে রোগীদের।

এ ছাড়াও ৫০ শয্যাবিশিষ্ট এ হাসপাতালে একটি জেনারেটর থাকলেও তা ঠিক মতো চালু করা হয় না। বিদ্যুৎ চলে গেলে পুরো হাসপাতাল অন্ধকারে ডুবে যায়। চার্জিং বাল্বের ব্যবস্থা থাকলেও তা কয়েকটি বাতিতে সীমাবদ্ধ। বাকি অংশ অন্ধকারে থাকে, যা রাতে রোগী ও স্বজনদের জন্য ভয়ের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

সরেজমিনে, দোতলায় উঠার সিঁড়িতে বেশ ময়লা। মেঝেতেও ময়লার দাগ। দেয়ালের কোথাও কোথাও কফ, থুতু ও পানের পিকের দাগ লেগে আছে। রোগীদের শৌচাগার দীর্ঘদিন পরিষ্কার না নোংরা হয়ে আছে।

এ ছাড়া বেসিনের অবস্থাও নাজুক। এসব নিয়ে রোগী ও স্বজনরা নিয়মিত অভিযোগ করলেও অবস্থার উন্নতি হচ্ছে না।

গোপালপুর থেকে আসা রোগী মৌসুমি আক্তার বলেন, হাসপাতালের খাবারের মান ভালো না। আমরা সব সময় বাইরে থেকে কিংবা বাসা থেকে খাবার নিয়ে আসি। পেটে ব্যথা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি। স্যালাইন ছাড়া আর কোনো ওষুধ দেয়নি কর্তৃপক্ষ।

মৌসুমি আক্তারের ১০ বছর বয়সী মেয়ে সুমাইয়ার ভাষ্য, হাসপাতালের টয়লেটে গিয়ে বমি বমি ভাব হয়েছিল। পরে টয়লেট না করেই চলে এসেছি।

রহিমা নামের এক রোগীর আত্মীয় বলেন, হাসপাতালের টয়লেটের অবস্থা খুবই বাজে। কোনো সময়ই পরিষ্কার করা হয় না। কোনো মানুষ এখানে টয়লেট করতে পারেন না। হাসপাতালের লোকজন কোনো কাজ করে না। আমরা খুব কষ্টে হাসপাতালে অবস্থান করি, দেখার কেউ নেই।

এ বিষয়ে ভূঞাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ আব্দুস সোবাহান বলেন, হাসপাতালে পর্যাপ্ত পরিমাণে ওষুধের সরবরাহ নেই। টয়লেট পরিষ্কার করার মতো লোক নেই। বাইরে থেকে লোক ডেকে এনে কাজ করাতে করতে হয়।

এ ছাড়া এক বছর ধরে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক না থাকায় সিজার হচ্ছে না। এসব বিষয় সমাধানের জন্য মন্ত্রণালয়ে জানানো হয়েছে। তবুও আমরা যথাযথ সেবা দিয়ে যাচ্ছি।